নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: নাহিদ ইসলাম

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক :  জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এর মাধ্যমেই দেশের জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বিশ্বের কাছে স্পষ্ট বার্তা যাবে যে, বাংলাদেশ স্থিতিশীল পথে ফিরছে।

শনিবার (২৯ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘চতুর্থ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন ২০২৫’-এর ‘অর্থনীতির ভবিষ্যৎ পথরেখা ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যদি আমরা এই ট্রানজিশনটা শান্তিপূর্ণভাবে করতে না পারি, তাহলে অস্থিরতা থেকে যাবে। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ও বিশ্ববাসী বুঝতে পারবে দেশ আসলে স্থিতিশীল হচ্ছে কি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬ বছরের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি রাতারাতি পূরণ করা সম্ভব নয়, এমনকি চেষ্টাও করা উচিত নয়। এক বছর বা দেড় বছরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা বড় ধরনের পরিবর্তন আনা বাস্তবসম্মত নয়। এজন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। তবে সমাজের প্রতি ইতিবাচক সিগন্যাল দিতে হবে যে, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। কর্মসংস্থানের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ওপর। এটি গড়ে তুলতে পারলে তরুণদের কর্মসংস্থানের সমস্যার সমাধান সম্ভব।’

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পেছনে তরুণদের রাজপথে নামার মূল কারণ অনুসন্ধান করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেটি ছিল মূলত বৈষম্য, কর্মসংস্থানহীনতা ও অর্থনৈতিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ।’

পূর্ববর্তী শাসনামলকে তিনি ‘লুটপাটের অর্থনীতি’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘অর্থ পাচার, ব্যাংক লুট, মাফিয়াতন্ত্র ও অলিগার্ক শ্রেণির উত্থানের কারণেই সমাজে বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছিল। এ কারণেই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।’

তিনি ‍আরও বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলেও আমরা সচেতনভাবে এর নাম দিয়েছিলাম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, যাতে এটি শুধু একটি গোষ্ঠীর স্বার্থ নয়, সমাজের বৃহত্তর মানুষের আন্দোলনে রূপ নেয়। সে সময় শ্রমিকদের মজুরি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থানের দাবি—সবই একসঙ্গে উঠে এসেছিল।’

তরুণদের টানা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন—সবই ছিল কর্মসংস্থান, ন্যায়বিচার, নগর পরিকল্পনার ব্যর্থতা ও জীবনযাত্রার দুরবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।’

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে তিনি নগর পরিকল্পনার মৌলিক প্রশ্নের সঙ্গে যুক্ত করে বলেন, ‘বায়ুদূষণ, ট্রাফিক জ্যাম, বাড়িভাড়া, দ্রব্যমূল্য—এসবের চাপে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে মানুষ বাঁচার মতো পরিবেশ হারিয়েছে। তরুণরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের যে অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সেগুলোর সুষ্ঠু সমাধানই পারে বাংলাদেশকে স্থায়ীমধ্য দিয়ে উঠে আসার চেষ্টা হয়েছিল।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে প্রার্থিতা বাতিল: ইসি আনোয়ারুল

» ‘তারেক রহমান এখনো ভোটার হননি, ইসি চাইলে ভোটার হতে পারবেন’

» খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তথ্য দেবেন শুধুই ডা. জাহিদ

» স্কুলে যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কায় শিক্ষিকার মৃত্যু

» জেলার ২: কিং খান–রজনীকান্ত একসাথে!

» দেশের স্বার্থে বেগম খালেদা জিয়াকে আরও প্রয়োজন : রিজভী

» শিক্ষিকার মৃত্যুতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

» দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে যুবক গুলিবিদ্ধ

» তবে কি গোপনেই বিয়ে সারলেন অভিনেত্রী সামান্থা?

» ছিনতাই চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: নাহিদ ইসলাম

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক :  জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এর মাধ্যমেই দেশের জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বিশ্বের কাছে স্পষ্ট বার্তা যাবে যে, বাংলাদেশ স্থিতিশীল পথে ফিরছে।

শনিবার (২৯ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘চতুর্থ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন ২০২৫’-এর ‘অর্থনীতির ভবিষ্যৎ পথরেখা ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যদি আমরা এই ট্রানজিশনটা শান্তিপূর্ণভাবে করতে না পারি, তাহলে অস্থিরতা থেকে যাবে। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ও বিশ্ববাসী বুঝতে পারবে দেশ আসলে স্থিতিশীল হচ্ছে কি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬ বছরের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি রাতারাতি পূরণ করা সম্ভব নয়, এমনকি চেষ্টাও করা উচিত নয়। এক বছর বা দেড় বছরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা বড় ধরনের পরিবর্তন আনা বাস্তবসম্মত নয়। এজন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। তবে সমাজের প্রতি ইতিবাচক সিগন্যাল দিতে হবে যে, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। কর্মসংস্থানের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ওপর। এটি গড়ে তুলতে পারলে তরুণদের কর্মসংস্থানের সমস্যার সমাধান সম্ভব।’

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পেছনে তরুণদের রাজপথে নামার মূল কারণ অনুসন্ধান করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেটি ছিল মূলত বৈষম্য, কর্মসংস্থানহীনতা ও অর্থনৈতিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ।’

পূর্ববর্তী শাসনামলকে তিনি ‘লুটপাটের অর্থনীতি’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘অর্থ পাচার, ব্যাংক লুট, মাফিয়াতন্ত্র ও অলিগার্ক শ্রেণির উত্থানের কারণেই সমাজে বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছিল। এ কারণেই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।’

তিনি ‍আরও বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলেও আমরা সচেতনভাবে এর নাম দিয়েছিলাম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, যাতে এটি শুধু একটি গোষ্ঠীর স্বার্থ নয়, সমাজের বৃহত্তর মানুষের আন্দোলনে রূপ নেয়। সে সময় শ্রমিকদের মজুরি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থানের দাবি—সবই একসঙ্গে উঠে এসেছিল।’

তরুণদের টানা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন—সবই ছিল কর্মসংস্থান, ন্যায়বিচার, নগর পরিকল্পনার ব্যর্থতা ও জীবনযাত্রার দুরবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।’

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে তিনি নগর পরিকল্পনার মৌলিক প্রশ্নের সঙ্গে যুক্ত করে বলেন, ‘বায়ুদূষণ, ট্রাফিক জ্যাম, বাড়িভাড়া, দ্রব্যমূল্য—এসবের চাপে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে মানুষ বাঁচার মতো পরিবেশ হারিয়েছে। তরুণরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের যে অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সেগুলোর সুষ্ঠু সমাধানই পারে বাংলাদেশকে স্থায়ীমধ্য দিয়ে উঠে আসার চেষ্টা হয়েছিল।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com